• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পদ্মাপারের সঙ্গে উৎসবে মেতেছে পুরো দেশ               

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২২  

নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে প্রমত্তা নদীর বুকে নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু মহাধুমধামে উদ্বোধন হয়ে গেল আজ যাচ্ছে  (২৫ জুন)। এদিন সকাল ১০টায় মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সরকারপ্রধান পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে জাজিরা প্রান্তে গিয়ে সেখানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। 

উদ্বোধনের পর সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে সেতুর আদলেই। মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাংলাবাজার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটে পদ্মা নদীর পাড়ে আয়োজন করা হচ্ছে এ জনসভা। প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের জন্য ১৫ একর জায়গাজুড়ে চলছে জনসভার প্রস্তুতি ছিল। নারীদের জন্য ছিল আলাদা বসার ব্যবস্থা। বিশাল এই জনসভায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ যোগ দিয়েছিল।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে আজ সারাদিন এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী করে নিলো পুরো দেশ। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে  সারা দেশ উৎসব, আনন্দ, উল্লাসে মেতেছিল। এ জন্য বর্ণিল সাজে সেজেছে পুরো দেশ। জেলায় জেলায় সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ নানা আয়োজন করেছেন এই দিনে। ইতোমধ্যেই দেশের ৬৪টি জেলায় জেলা প্রশাসন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আজ পদ্মাপারে মূল উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সঙ্গে ৬৪ জেলাও সঙ্গী হলো। পদ্মা সেতু সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো দেশ।আলোকসজ্জা করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক, সেতু ও সরকারি ভবনে।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন পদ্মাপারের মানুষ থেকে শুরু করে দক্ষিণের ২১ জেলার মানুষ। পথে-ঘাটে, চায়ের কাপে, আড্ডায়-আলোচনায় সেই আনন্দেরই অনুরণন। চোখেমুখে স্বপ্নপূরণের আলোকছটা।

প্রাণের সে উৎসবের ছটা পড়েছে সবখানে। সড়ক-মহাসড়ক, রাস্তাঘাট, হাটবাজার ও অলিগলি ছেয়ে গেছে পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড আর তোরণে। যতদূর চোখ যায় যেন রঙের ছড়াছড়ি। বিভিন্ন স্থানে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। মরিচবাতিতে উজ্জ্বল সেতু, নৌকা আর জাতীয় পতাকার প্রতিকৃতি। 

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু নির্মাণে কাজ ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর শুরু করে সরকার। মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় মাওয়া প্রান্তে ৬ নম্বর পিলারের কাজ দিয়ে। ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির আয়ুষ্কাল ১০০ বছর। 

সেতু চালুর পরপরই বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি। পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক হারে শিল্পায়ন হবে এবং লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বিশেষ করে কৃষিতে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সেই সঙ্গে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির ব্যাপক হারে পরিবর্তন সাধিত হবে। উৎপাদিত কৃষি পণ্য দ্রুত পরিবহণের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে যাবে। এতে প্রতি বছর দারিদ্র্য নিরসন হবে ০ দশমিক ৮৪ ভাগ। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ছয় কোটি মানুষের।  একইসঙ্গে পরোক্ষভাবে পুরো দেশই এই পদ্মা সেতুর সুফল পাবে।
কে/

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –